রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ১০:০২ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
খালেদা জিয়ার ৭৭তম জন্মদিন আজ, আনুষ্ঠানিকতা নেই

খালেদা জিয়ার ৭৭তম জন্মদিন আজ, আনুষ্ঠানিকতা নেই

স্বদেশ ডেস্ক:

বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ৭৭তম জন্মদিন আজ। ১৯৪৫ সালের এই দিনে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। জন্মদিনের এই লগ্নে বিএনপি প্রধান অসুস্থ হয়ে গুলশানের বাসায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

করোনা মহামারীর প্রকোপ শুরু হওয়ার পর গত বছরের মার্চে সরকারের নির্বাহী আদেশে ২৫ মাস কারাগারে কাটানোর পর মুক্তি পান বেগম জিয়া। বিএনপি বলছে, বেগম জিয়াকে মুক্তি দেয়া হলেও তাকে সরকার গৃহবন্দি করেই রেখেছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়া জরুরি হলেও কেবলমাত্র রাজনৈতিক করনে তাকে যেতে দেয়া হচ্ছে না।

জন্মদিন উপলক্ষে আড়ম্বরপূর্ণ কোনো কর্মসূচি নেই। সারা দেশে নেত্রীর সুস্থতা কামনা করে আগামীকাল দোয়া মাহফিল করবে বিএনপি ও এর বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠন।

খালেদা জিয়ার পৈতৃক বাড়ি ফেনী জেলার ফুলগাজী উপজেলার শ্রীপুরে। তার বাবা এস্কান্দার মজুমদার চাকরিজীবী ছিলেন। মাতা তৈয়বা মজুমদার ছিলেন দিনাজপুরের চন্দন বাড়ির মেয়ে। পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে খালেদা জিয়া তৃতীয়। ১৯৬০ সালের আগস্টে বগুড়ার ক্যান্টনমেন্টে কর্মরত সেনাকর্মকর্তা জিয়াউর রহমানের সাথে তিনি বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হন।

বেগম জিয়ার দুই সন্তানের মধ্যে বড় ছেলে তারেক রহমান বর্তমানে লন্ডনে রয়েছেন, ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো ইন্তেকাল করেছেন। তারেক রহমানের ঘরে তার এক নাতনী জাইমা ও আরাফাত রহমানের ঘরে জাফিয়া ও জাহিয়া নামে দুই নাতনি রয়েছে।

১৯৮১ সালের ৩০ মে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে দেশী-বিদেশী চক্রান্তে বিপথগামী সৈন্যদের হাতে নির্মমভাবে নিহত হন। এর পরপরই জিয়াউর রহমানের গড়া বিএনপির রাজনীতিতে আগমন ঘটে খালেদা জিয়ার। দলের নেতাকর্মীদের দাবির মুখে ১৯৮২ সালের ২ জানুয়ারি তিনি বিএনপির প্রাথমিক সদস্য হন। ’৮৩ সালের মার্চে দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান এবং ’৮৪ সালের ১২ জানুয়ারি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দলের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এরপর ১৯৮৪-এর ১ মে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দলের চেয়ারপারসন নির্বাচিত হন।

স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী দীর্ঘ আপসহীন আন্দোলনের পর ১৯৯১ সালে তিনি বাংলাদেশের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। এ পর্যন্ত তিন দফায় প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন খালেদা জিয়া। ১৯৯৩ সালে তিনি সার্কের প্রথম মহিলা চেয়ারপারসন হন। ২০০১ সালের ১ অক্টোবরের নির্বাচনে বেগম জিয়ার নেতৃত্বাধীন চার দলীয় জোট নির্বাচনে জয়লাভের পর তৃতীয়বারের মতো সরকার গঠন করে। ওয়ান-ইলেভেনের পর মঈন-ফখরুদ্দীন সরকার ২০০৭ সালের ৩ সেপ্টেম্বর তাকে কারাবন্দী করে। ২০০৮ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কারাভোগ করেন তিনি। সেবার কারাগারে প্রথম জন্মদিন কেটেছে তার। কারাগারে থাকা অবস্থায় তার অনড় মনোভাবের কারণে ‘মাইনাস টু ফর্মুলা’ থেকে সরে আসতে বাধ্য হয় ওই সরকার। পরে তারা নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন দেয়। ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি কাঙ্খিত ফল না পেয়ে সরকার গঠনে ব্যর্থ হয়। সেই থেকে সরকারি দলের দমন-পীড়ন ও মামলা-হামলার বৃত্তে বন্দী দেশের অন্যতম বৃহৎ এই রাজনৈতিক দল। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির একতরফা নির্বাচন বর্জন করে দলটি। একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় সাজা হয় বেগম জিয়ার। খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে ২০১৮ সালের নির্বাচনেও বিএনপি কাঙ্খিত ফল পায়নি। দলটি এখন নতুন করে আন্দোলন সংগ্রামের প্রস্তুতি নিচ্ছে।

করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে ছয় মাসের জন্য সাজা স্থগিত করে গত ২৫ মার্চ খালেদা জিয়াকে শর্তসাপেক্ষে মুক্তি দেয় সরকার। তিনি বাসায় থেকে চিকিৎসা নেবেন এবং বিদেশ যেতে পারবেন না- এমন শর্তে সাজা স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।এরপর কয়েকদফায় বেড়েছে তার মুক্তির মেয়াদ। গুলশানের ফিরোজার বাসায় তিনি রয়েছেন। এরই মধ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি। ভর্তি ছিলেন রাজধানীর একটি হাসপাতালে। করোনা নেগিটিভ হওয়ার পরেও শারীরিক নানা জটিলতার চিকিৎসার জন্য হাসাপাতালে ভর্তি ছিলেন মাসাধিকাল। এখন তার স্বাস্থ্যের অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে।

কর্মসূচি :
বেগম খালেদা জিয়ার আরোগ্য, দীর্ঘায়ু ও মুক্তি কামনা এবং করোনাসহ অন্যান্য রোগে মৃত্যুবরণকারী দেশবাসী ও দলের নেতাকর্মীদের আত্মার মাগফেরাত ও অসুস্থদের আশু সুস্থতা কামনায় আগামীকাল ১৬ আগস্ট সোমবার দেশব্যাপী বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির উদ্যোগে দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের কর্মসূচি দেয়া হয়েছে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877